সম্মানীত করদাতাদের জ্ঞাতার্থে খোলা চিঠি !

সম্মানীত করদাতা,
আসসালামু আলাইকুম। আশাকরি মহান রব্বুর আলামিনের ইচ্ছায় ভাল আছেন।

আপনার জানেন ব্যক্তি শ্রেনীর করদাতাদের জন্য ১লা জুলাই ২০২৩ তারিখ হইতে ২০২৩-২০২৪ করবর্ষের আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় চলমান যাহার শেষ দিন ৩০ শে নভেম্বর ২০২৩।

আয়কর আইন ২০২৩ মোতাবেক কোন ক্রমেই আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় বৃদ্ধির সুযোগ নাই। উক্ত ৩০ শে নভেম্বর ২০২৩ ইং তারিখ এর মধ্যে রিটার্ন দাখিল করতে ব্যার্থ হইলে আয়কর আইন ২০২৩ এর ধারা ১৭৩ মোতাবেক প্রদেয় করের উপর ধারা ১৭৪ মোতাবেক প্রতি মাসে ৪% হারে অতিরিক্ত কর ও জরিমানা প্রদান করিতে হইবে।

সুতরাং অতিরিক্ত কর ও জরিমানা এড়াতে আপনার আয়কর রিটার্ন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দাখিল করতে অনুরোধ করছি এবং আপনার ব্যবসা, পেশা বা চাকুরীর ধরন অনুযায়ী অনুগ্রহ পূর্বক নিম্ন লিখিত ডকুমেন্টস অবশ্যই আপনার নিয়োজিত আয়কর আইনজীবীকে সরবরাহ করুন।

মনে রাখবেন আপনার আয়কর রিটার্ন সঠিক ও নির্ভূল ভাবে প্রস্তুত করা না হলে আয়কর সংক্রান্ত নানাবিধ জটিল সমস্যার সম্মূখীন হতে পারেন। আপনার আয় ও বিনিয়োগ এর সমূদয় তথ্য আয়কর রিটার্নে প্রদর্শন করুন।

আপনার জ্ঞাতার্থে আরো জানাচ্ছি যে, আপনার নিয়োগকৃত আইনজীবী কর্তৃক প্রস্তুতকৃত আয়কর রিটার্নের খসড়া ভালভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা করুন এবং কোন আয় ব্যয় ,পরিসম্পদ ও দায় সঠিকভাবে প্রদর্শিত হয়েছে কিনা দেখে নিন। যদি সকল তথ্য সঠিকভাবে প্রদর্শিত হয়ে থাকে তাহলে উক্ত রিটার্ন স্বাক্ষর করে আপনার নিয়োগকৃত আয়কর আইনজীবীর মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সার্কেল অফিসে দাখিল করুন এবং স্বাক্ষরিত আয়কর রিটার্ন এর এককপি অবশ্যই আপনার নিকট সংরক্ষন করুন।

১লা জুলাই ২০২২ইং হইতে ৩০শে জুন ২০২৩ইং পর্যন্ত মেয়াদে আয়কর রিটার্ন দাখিলের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র/তথ্যাদির বিবরণ
১. বেতন খাতঃ
(ক) বেতন বিবরণী।
(খ) ব্যাংক বিবরনী।
(গ) ব্যাংক হিসাব থাকলে কিংবা ব্যাংক সুদ খাতে আয় থাকলে ব্যাংক হিসাব বিবরনী বা ব্যাংক সার্টিফিকেট।
(ঘ) বিনিয়োগ ভাতা দাবী থাকলে তার সপক্ষে প্রমানাদি। যেমনঃ জীবন বীমার পলিসি থাকলে প্রিমিয়াম পরিশোধের প্রমাণ/ডিপিএস/শেয়ার বিনিয়োগ/সঞ্চয়পত্র ক্রয় ইত্যাদির বিবরন।

২. নিরাপত্তা জামানতের সুদ খাতঃ
(ক) বন্ড বা ডিবেঞ্চার ক্রয় করা হয় তার ফটোকপি।
(খ) সুদ আয় থাকলে সুদ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের প্রত্যয়নপত্র।
(গ) প্রাতিষ্ঠানিক ঋণ নিয়ে বন্ড বা ডিবেঞ্চার কেনা হয়ে থাকলে ঋণের সুদের সমর্থনে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সার্টিপিকেট/ব্যাংক বিবরণী বা প্রাতিষ্ঠানিক প্রত্যয়নপত্র।

৩. গৃহসম্পত্তি খাতঃ
(ক) বাড়ী ভাড়ার সমর্থনে ভাড়ার চুক্তিনামা বা ভাড়ার রশিদের কপি, মাস ভিত্তিক বাড়ী ভাড়া প্রাপ্তির বিবরন এবং বাড়ী ভাড়া জমা সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাব বিবরনী।
(খ) পৌর কর সিটি কর্পোরেশন কর, ভূমি রাজস্ব প্রদানের সমর্থনে রশিদের কপি।
(গ) ব্যাংক ঋণের মাধ্যমে বাড়ী কেনা বা নির্মান করা হয়ে থাকলে ঋণের সুদের সমর্থনে ব্যাংক হিসাব বিবরনী ও সার্টিফিকেট।
(ঘ) গৃহসম্পত্তি বীমাকৃত হলে বীমার রশিদের কপি।

৪. ব্যবসা বা পেশা খাতঃ
ব্যবসা বা পেশার আয়-ব্যয়ের বিবরণী, রেওয়ামিল ও ব্যাংক হিসাব বিবরণী।

৫. অংশীদারী ফার্মের আয়ঃ
ফার্মের আয় ব্যয়ের বিবরণী, স্থিতিপত্র ও ব্যাংক হিসাব বিবরণী।

৬. মূলধনী লাভঃ
(ক) স্থাবর সম্পত্তি বিক্রয়/হস্তান্তর হলে তার দলিলের কপি।
(খ) উৎসে আয়কর জমা হলে তার চালান/পে-অর্ডারের ফটোকপি।
(গ) পুঁজিবাজারে তালিকাভূক্ত কোম্পানীর শেয়ার লেনদেন থেকে মুনাফা হলে এ সংক্রান্ত প্রত্যয়নপত্র।

৭. আমদানী কারক হলে আমদানীর সমর্থনে বিল অফ এন্টির কপি ও ব্যাংক থেকে কর কর্তনের সমর্থনে সার্টিফিকেট।

৮. ঠিকাদারী বা সরবরাহকারীঃ
(ক) ব্যাংক হিসাব বিবরনী।
(খ) পেমেন্ট সার্টিফিকেট।
(গ) উৎসে কর কর্তনের প্রমাণস্বরুপ চালান এর ফটোকপি।

৯. অন্যান্য উৎসের আয়ের খাতঃ
(ক) নগদ লভ্যাংশ খাতে আয় থাকলে (এফডিআর, ডিপিএস) ব্যাংক হিসাব বিবরণী, ডিভিডেন্ড ওয়ারেন্টের কপি বা সার্টিফিকেট।
(খ) সঞ্চয়পত্র হতে সুদ আয় থাকলে সুদ প্রাপ্তির সর্টিফিকেট বা নগদায়ন হলে নগদায়ন সার্টিফিকেট।
(গ) ব্যাংক সুদ আয় থাকলে ব্যাংক হিসাব বিবরনী/সার্টিপিকেট।
(ঘ) কম্পিউটার ক্রয় করলে ক্রয় রশিদ।
(ঙ) জমি ক্রয় বিক্রয় থাকলে দলিলের ফটোকপি।
(চ) অন্য যে কোন আয়ের উৎসের জন্য প্রাসঙ্গিক কাগজপত্র।
১০. আয়কর পরিশোধের প্রমাণ (উৎসে কর কর্তনসহ):
(ক) আয়কর পরিশোধের সমর্থনে চালানের ফটোকপি, পে-অর্ডার/ব্যাংক ড্রাফট।
১১. কার ট্যাক্স ডকুমেন্ট।
১২. এছাড়া প্রত্যেক করদাতার জন্য ব্যাংক হিসাব বিবরণী দাখিল করা অত্যাবশ্যক।

সঠিক নিয়মে আয়কর প্রদান করুন সেইসাথে আপনার সম্পদ সুরক্ষিত রাখুন। দেশ গড়াতে সহায়তা করে দেশের গর্বিত নাগরিক হউন।

Cell:+8801311247233
Email:anwar19associates@gmail.com